Monday, June 30, 2008

গ্রেফতারের পর নিজামী : পর্ব – ১


[ এই গল্পের কাহিনী চরিত্র সম্পূর্ণ কাল্পনিকপাঠকের বাস্তব অভিজ্ঞতার সাথে সাদৃশ্য থাকলে তা নিতান্ত কাকতালীয়।]

একজন প্রবীণ ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছেন। সংক্ষেপে তাঁকে নিজামী নামেই মানুষ চিনে। তাঁর নামের শুরুতে অধ্যাপক আছে কিনা জানা নেই। অবশ্য থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু না। তাঁর বেশ-ভূষায় তাঁকে বেশ জ্ঞানী লোক বলেই মনে হয়। আর somewherein ব্লগের ব্লগার মাইনুল সাহেবের মতে - রাজাকার গোলাম আযম প্রভাষক হিসেবে কিছুদিনের জন্য শিক্ষকতা করে, অধ্যাপক হবার যোজন যোজন মাইল দূরে থাকলেও, অনেক জ্ঞানী লোক হবার সুবাদে তিনি অধ্যাপক পদমর্যাদার অধিকারী হতেই পারেন! সে হিসেবে নিজামী অধ্যাপক না হয়ে যায়ই না! যাই হোক, আমাদের কাল্পনিক গল্পে নিজামীর অধ্যাপক পদমর্যাদার গুরুত্ব নেই বলেই আশা করছি।

নিজামী - তথাকথিত brain-washed মূর্খ লোকদের মুখে যিনি আলোচিত, নন্দিত; সচেতন মানুষের কাছে সমালোচিত, নিন্দিত, ঘৃণিত। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাঁর গ্রেফতার নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন। কখন কি অনাকাঙ্খিত ঘটে যায়!

যাক। অবশেষে গ্রেফতার করা গেছে! তুমুম উত্তেজনা ও হট্টগোলের মাঝে নিজামীকে বুলেট-প্রুফ গাড়িতে উঠানো হয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে পেছনের সিটে তাঁর সাথে মাত্র একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা বসেছেন! যাই হোক, গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে। রাতের নির্জনতা ভেদ করে সাঁই সাঁই করে গাড়ি ছুটে চলেছে। অফিসারের হঠাৎ কি বলার প্রয়োজন দেখা দিল। ড্রাইভারকে কানে কানে তিনি কি যেন বললেন। সদ্য বন্দীর সেটা পছন্দ হল না।

বন্দী নিজামী বলল, দেখুন, হাদিসে আছে, তোমরা যদি ৩ জন থাকো, তাহলে একজনকে বাদ দিয়ে বাকি ২ জন গোপনে কথা বলো না। তাই আপনি কাজটা ঠিক করছেন না। যা বলার আমাকেও শুনিয়ে বলুন।

শুনে অফিসারের পিত্তি জ্বলে যায়।

মনে মনে বলল, চুপ থাক বেকুব! কিসের মধ্যে কি! সব জায়গায় ধর্মের দোহাই দেওয়ার অভ্যেস গেল না!

কিন্তু মুখে পাল্টা উত্তর দিল, শুনুন। বুঝে শুনে মাথা খাটিয়ে হাদিস প্রয়োগ করেন। আপনার নামে মামলা হয়েছে। আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। রাষ্ট্রের কাছে আপনি এখন একরকম শত্রু বলা চলে। আর শত্রুর সামনে এই হাদিস প্রযোজ্য না। বুঝা গেছে? কমন সেন্স এপ্লাই করেন।

নিজামী চুপসে যায়। কত্ত বড় কথা! কমন সেন্স এর খোঁচা দেওয়া হয়। আরে বেটা, কমন সেন্স এর অভাব থাকলে কি অতীতে আকাম-কুকাম করেও এখন দিব্যি ভাল থাকি! গ্রেফতারের ব্যাপারটা অবশ্য আলাদা....



[ প্রথম প্রকাশ somewherein ব্লগে ]

No comments: