ছোট্ট একটা রুম। তিন বেডের। ইংরেজি ইউ-প্যাটার্নে বেডগুলো ফেলা হয়েছে। রুমটা সচরাচর নোংরা হয়ে থাকে। গতকাল সাফসুতরোর কাজ করা হয়েছে। রুমের সদস্যসংখ্যা বর্তমানে ২। রুম হঠাৎ পরিষ্কার হওয়াতে তাদের কেমন যেন অস্বস্তি লাগছে। কারাগারের কোণার দিকের এই রুমটাতে আজকে বিশেষ কাউকে আনা হচ্ছে – এই ব্যপারটা তাদের অনুমান করতে অসুবিধে হয়নি। বিশেষ ব্যক্তির সাথে একই রুমে বসবাস বিশেষ ‘সুখকর’ হবে বলে তারা যারপরনাই বিরক্ত।
রুমের ২ বাসিন্দার একজন অল্পবয়সী। নাম – সবুজ। নিতান্ত সহজ সরল ভোদাই ছেলে। চট্টগ্রাম শহরের ছেলে। ৬ বছর আগে ঢাকার কোন একটা কলেজে তার পড়তে আসা। একটা মেয়ের সাথে প্রেম। তারপর পালিয়ে যাওয়া। মেয়ের পরিবারের অপহরণ মামলা দায়ের। গ্রেফতার। মেয়ের বিশ্বাসঘাতকতা। ফলাফল – ৭ বছরের জেল।
রুমের অপরজনের বয়স কম করে হলেও ৬০। নাম – মনসুর আলি। সবুজ ডাকে মনসুর কাকা। সবুজ অনেকবার জিজ্ঞেস করেছে কি কারণে মনসুর কাকার হাজতবাস। মনসুর কাকা বিরক্ত হয় তখন। বলে – “ধুর! বাদ দাও।” এই গল্পে তিনি আমাদেরও মনসুর কাকা।
এখন পা ঝুলিয়ে দুজনই খাটে বসে আছে। মনসুর কাকা করিডোরের দিকে তাকিয়ে আছেন। বেশির ভাগ সময় তিনি এটাই করেন। ফাঁকা দৃষ্টি, শুণ্য দৃষ্টি – এইটা কি জিনিস সবুজ মনসুর কাকাকে দেখেই বুঝেছে। সবুজ তাকিয়ে আছে ফ্লোরের দিকে। একসময় কাকা সেটা খেয়াল করেন। সবুজকে জিজ্ঞেস করেন,
- সবুজ? কি অবস্থা? মন-টন উচাটন?
- কাকা, ভাল্লাগতেছে না।
- কেন্?
- কিছু না। এমনি।
- অ...............। বুঝছি। প্রেমিকার কথা মনে পড়ে?
- কি? মেয়ে ভাল লাগে এখনো?
- কাকা চুপ করেন।
- শোনো। কোন মেয়েরে যদি তোমার ভাল লাগে, কিন্তু সে তোমার সাথে টালবাহানা করে, ছলনা করে, তাইলে তারে ভুলার জন্য কি করবা জানো?
- কি করমু? সবুজ মজা পায় কাকার কথায়।
- চোখ বন্ধ কইরা তারে টয়লেটে কল্পনা করবা। ইংলিশ না, বাংলা টয়লেটে। বুঝছো?
[ প্রথম প্রকাশ somewherein ব্লগে ]
No comments:
Post a Comment